বিয়ের আনন্দের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেন কাজী সাহেব। কাজী বিয়ে রেজিস্ট্রি করে পাত্র-পাত্রীকে একত্রিত করে থাকেন। বিয়ে করতে সকলকে রেজিষ্ট্রী কাজী অফিসের মাধ্যমে করতে হয়। কাজী অফিস বাংলাদেশ আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে। কাজী অফিসে বিবাহ সম্পর্কীয় বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে।
কী সেবা কীভাবে পাবেন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত নিম্নোক্ত হারে ফি নিয়ে থাকে।
ক্র. নং |
নাম |
চার্জ |
(১) |
বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন |
কাবিননামায় ধার্যকৃত দেনমোহরের প্রতি ১,০০০ টাকায় ১২.৫০ টাকা হারে চার্জ প্রদান করতে হয়। [প্রতি ১ লক্ষ টাকায় ১,২৫০ টাকা।] |
(২) |
তালাক রেজিষ্ট্রেশন |
৫০০ টাকা চার্জ প্রদান করতে হয়। |
(৩) |
বাংলা কাবিননামা |
২০০ টাকা |
(৫) |
ইংরেজী কাবিননামা |
এ সকল ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত কোন চার্জ নেই। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের চার্জ নিয়ে থাকে। |
(৪) |
আরবী কাবিননামা |
|
(৫) |
বিবাহ সার্টিফিকেট |
|
(৬) |
কোর্ট ম্যারেজ সার্টিফিকেট সরবরাহ |
|
(৭) |
হারিয়ে যাওয়া কাবিননামা প্রস্তুত |
|
(৮) |
স্বামী-স্ত্রী বিদেশ যেতে কাবিন নামা সরবরাহ |
বিবাহ রেজিস্ট্রি ফি
রেজিষ্ট্রি ফি দেনমোহর টাকার উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে রেজিস্ট্রেশন ফি-প্রতি হাজারে দশ টাকা,
সর্বনিম্ন ৫০ টাকা,
সর্বোচ্চ ৪০০০ টাকা।
(কিন্তু সরকার সময়ে সময়ে রেজিস্ট্রেশন ফি পরিবর্তন করে থাকেন)। এছাড়া প্রতিটি বিবাহের রেজিস্ট্রেশন বাবদ নিকাহ রেজিস্টার ২৫ টাকা কমিশন পাবেন এবং তিনি বিবাহের অনুষ্ঠানে গিয়ে রেজিস্ট্রি করালে, যাতায়াত ভাতা বাবদ প্রতি মাইলে ১.০০ (এক) টাকা বকরে পাবেন। বর পক্ষ সাধারণত রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান করে থাকেন। রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেয়া হলে নিকাহ্ রেজিস্টার একটি প্রাপ্তি রশিদ দিবেন। রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কাগজ স্বামী ও স্ত্রী দুজনের কাছেই রাখতে হবে। অন্যথায় স্ত্রী সমস্যায় পরলে আদালতের কাছে সাহায্য চাইতে পারবেন না।
অপরাধ
কাজীর অনুপস্থিতিতে বিয়ে হলেও বিয়ের কথা কাজী অফিসে না জানানো আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। যিনি বিবাহ সম্পন্ন করেছেন তিনিই নিকাহ্ রেজিস্টারের নিকট প্রতিবেদন পেশ করবেন।
শাস্তি
বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইনে (সংশোধিত ৮ই মার্চ, ২০০৫) বলা হয়েছে যে, যে সমস্ত বিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রার কর্তৃক সম্পাদিত হয়নি সেসব বিয়ে যে বা যারা করেছেন তিনি রেজিস্ট্রেশন করার উদ্দেশ্যে উক্ত বিয়ের খবর নিকাহ রেজিস্ট্রারের নিকট দিবেন। যদি কেউ এই নিয়ম পালন না করে তবে সে দুই বছরের কারাদন্ড বা ৩০০০ (তিন হাজার) টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবে।
পরামর্শ
প্রতিটি ইউনিয়নে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত একজন করে কাজী আছেন। তিনি বিবাহ রেজিস্ট্রি করবেন। যদি বিবাহ সম্পাদনের দিন রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব না হয় তবে বিবাহের দিন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে বিবাহ রেজিস্টারের কার্যালয়ে গিয়ে বিবাহ রেজিস্ট্রি করতে হবে। বিয়ে রেজিস্ট্রেশানের সময় কাজী যে রশিদ দেন সেই রশিদ সংগ্রহ করে রাখতে হবে। কারণ কাবিননামা উঠানোর সময় এই রশিদ দেখালে কাজীকে নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত ফি দিতে হয় না। রশিদ দেখাতে না পারলে প্রতি তল্লাসির জন্য প্রতি পাতার জন্য কাজী অফিসে ১.০০ (এক টাকা) দিতে হয়। বিয়েটি রেজিস্ট্রি ভলিউমে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS